নিয়োগপত্র,নিজস্ব প্রতিনিধি : শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সরকারি চাকরি ছিল যেন আলাদিনের চেরাগ। ছয় বছরের চাকরি জীবনে হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক। আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমনই এক কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের চিত্র। রাজউকের ইমারত পরিদর্শক হয়ে তিনি প্রায় শত বিঘা জমির মালিক,গড়েছেন ডুপ্লেক্স বাড়িও । কে এই কর্মকর্তা? কি পরিচয় তার? কি কি অভিযোগই বা আছে তার বিরুদ্ধে?
গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার মৎসজীবী লীগ নেতা নিত্তরঞ্জন মালোর বড় ছেলে নির্মল মালো ঢাকার এক প্রাইভেট ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেন। নির্মল মালো, রাজউকের ইমারত পরিদর্শক হিসেবে ২০১৮ সালে যোগদান করেন ঢাকার রাজউকের প্রধান কার্যালয়ে। সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেই হাতে পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ।
মাত্র ৬ বছর চাকুরি করে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়ীতে ৪০ বিঘার উপর মাছের ঘের, বরিশালের উজিরপুরের শাতলা বাগধায় আনুমানিক ৪০ বিঘা জমি, কোটালীপাড়া পৌরসভার বাগান উত্তরপাড়ায় ২০ বিঘা জমির উপর পোল্ট্রি ফার্ম,কোটালিপাড়া পৌরসভায় বাগান উত্তরপাড়ার কমলকুড়ী স্কুল সড়কে ১০ কাঠা যায়গার উপর ডুপ্লেক্স বাড়ীর কথা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে।
আমাদের অনুসন্ধান টিমের কাছে নির্মল মালোর বিরুদ্ধে আসে একাধিক অভিযোগ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে দুর্নীতির নানা তথ্য। নির্মল মালো রাজউকের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিনখান অঞ্চলে কর্মরত আছেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে অবৈধ আয়ের আসল রহস্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার নির্মাণাধীন ভুক্তভোগী ভবন মালিক বলেন এলাকায় রাজউকের নিয়ম না মেনে বহুতল ভবন নির্মান হওয়ায় মওকা পেয়ে যান নির্মল।
বেশীর ভাগ মালিকানা ও ডেভেলপার কোম্পানির যোগসাজশে ঘুষ লেনদেন ও অনিয়ম দুর্নিতীর আশ্রয় নিয়ে অবৈধ অর্থ কামিয়েছেন নির্মল। ডেভিয়েশন, সরু রাস্তা, ভবনের আউটডোর, ইনডোর, রাজউকের নকশা বহির্ভূত নির্মাণ সহ বিভিন্ন অযুহাতে নোটিশের মাধ্যমে ভবন মালিক বা ডেভেলপার কোম্পানির লোকদেরকে অফিসে ডেকে আনতেন নির্মল মালো। এরপর বর্ধিতাংশ অপসারণ, ভবন নির্মান কাজ বন্ধ সহ বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে লাক্ষ লাক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
নির্মল মালোর নিজ এলাকা কোটালীপাড়ার একাধিক ব্যাক্তিও জানিয়েছেন তার এমন অপকর্মের কথা। নির্মল মালোর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয় মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কর্কশ ভাষা ব্যাবহার করেন। তিনি বলেন আমার নামে বেনামে যত সম্পদ আছে তা সব কামাল চেয়ারম্যানের। নির্মল মালোর কথার ভিত্তিতে ও তার কথার সত্যতা যাচাই করতে কোটালীপাড়ার সাবেক পৌর মেয়র শেখ কামাল হোসেনের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।